অ আ আবীর আকাশ, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার ফাজিল বেপারীর হাটের অনির্বান মাল্টিপারপাস কোঅপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড যার রেজিস্ট্রি নং -৪৭১(লক্ষ্মী)নামীয় একটি ঋণদান প্রতিষ্ঠানের এমডি একই এলাকার মৃত মাস্টার হোসেন আহম্মেদর ছেলে মুরাদ হোসেন ঋণ বিতরণ ও আদায় সংক্রান্তের জের ধরে ৩২জন গ্রাহকের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করেছেন বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে আরমান নামের এক ব্যক্তি অত্র প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করার সময় দায়িত্ব পালনকালে সড়ক দূর্টনায় মারাক্তক আহত হন।প্রতিষ্ঠান তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন না করায় সে আর্থিক অসচ্ছলতার কারনে অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে প্রথম ১০হাজার টাকা ঋণ নিয়ে চিকিৎসা করেন। এতে তার সংকুলান না হলে তিনি পূণরায় ২০হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। প্রথম টাকা শোধ হয়ে দ্বিতীয় কিস্তির মধ্যে ৯ হাজার ২০০টাকা জমা দেন এবং সঞ্চয় ২হাজার ৬০০টাকা জমা করেন। বাকি টাকা পরিশোধ করার পূর্বেই অনির্বাণ সংগঠনটি ভেঙে যায়।এদিকে এমডি মুরাদ হোসেন বাদী হয়ে ১৩জনকে বিবাদী করে কমলনগর থানায় এসডিআর দায়ের করেন যার নং ৫১ তাং ৩১জানুয়ারি ২০১৭।সেখানে আরমান প্রবাসে থাকায় বিবাদী করা হয় তার বাবা মাস্টার শহীদ উল্লাহ প্রকাশ কাশেমকে। সেখানে ৩৭হাজার ৩শ ৯৫টাকা পাবেন বলে সংগঠনের পক্ষে এমডি মুরাদ দাবী করেন।পরে সহপুলিশ পরিদর্শক মোঃজাহাঙ্গীর আলম তদন্ত করে এর সত্যতা পায়নি বলে জানা যায়।
এদিকে এ বছরের জুলাই মাসের ২২তারিখে বিলুপ্ত সংগঠনের এমডি মুরাদ হোসেন বাদী হয়ে পূণরায় লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী অঞ্চল -৪ এ ৩২জনকে বিবাদী করে এজাহার দায়ের করেন। যার নং সিআর ৩১২/১৮।
এজাহারে যাদের বিবাদী করা হয় -শামসল হকের ছেলে হেলাল,মমিন উল্লাহর ছেলে আবু তাহের, মৃত মারফত উল্লাহর ছেলে তাজল হক,নজির আহম্মের ছেলে শাহজাহান মিকার, মৃত মুসলিম খার ছেলে ইউসুফ আলী, মৃত আবদুল মালেকের ছেলে আবদূর রহমান, মৃত আবদূল লতিফের ছেলে মোঃ মাকসুদ,ইয়াকুবের ছেলে রুহুল আমিন,আনসার আলীর ছেলে মোঃ সিরাজ, মৃত মোহাব্বত আলীর ছেলে শহীদ উল্লাহ কাশেম, আবদুল মালের ছেলে ফারুক হোসেন,তোফায়েলের ছেলে আবু ছায়েদ,ওয়াবের ছেলে আনোয়ার হোসেন, খালেকের ছেলে আবদুল মান্নান,মৃত রুহুল আমিনের ছেলে ইকবাল হোসেন, নুরুল আমীন মেম্বারের ছেলে আরিপ হোসেন ও বেল্লাল হোসেন, জয়নাল আবদীনের ছেলে আবুল কালাম, আবুল হোসেনের ছেলে নুরনবী,আলী হায়দারের ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর, তোফায়েল আহম্মদের ছেলে আবু ছিদ্দিক, রফিক উল্লাহ মেম্বারের ছেলে ইকবাল হোসেন, মনির আহম্মদের ছেলে রমিজ উদ্দিন, তালেব আলীর ছেলে শরীফ হোসেন, আবদুল খালেকের ছেলে ফারুক হোসেন, আবদুল কাদেরের ছেলে রহমান বিশ্বাস সবুজ,হেদায়েত উল্লাহর ছেলে আবুল বাশার, সুলতান আহম্মদের ছেলে মোঃ ইব্রাহীম,নুরুল হকের ছেলে মোসলেহ উদ্দিন,জয়নাল আবেদীনের ছেলে আবদুল হক,নুরুজ্জামানের ছেলে আজিজুল হক ও সিরাজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ সোহেল।
মামলার ১৯নং আসামী নুরনবী বলোন-আমি ব্রীক ফিল্ডের গাড়ী চালাই, মুরাদ লেনদেন করেছে কোম্পানীর সাথে সে আআমাকো মিথ্যাভাবে মামলা দিয়ে হয়রানী করেছে।এবার আরমান বর্তমান এজাহারে শহীদ উল্লাহ কাশেম (যার বই নং ২৪২)এর কাছে ৮০হাজার টাকা পাবে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।যা মোটেও সত্য নয় বরং অহেতুক হয়রানী করার হীন মানসে এদের মামলা দিয়ে হেনস্তা করাই মামলার বাদীর মূল উদ্দেশ্য বলে ভুক্তভোগীরা মনে করেন।
শাহজাহান মিকার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন -আমি কোনোমতে রিক্সার মিকারী করে সংসার চালাই আর মুরাদ আমার নামে ৬০ হাজার টাকা পাবে বলে মামলা দিয়েছে। পরে স্থানীয় ইসমাইল মেম্বার নিয়ে বসলে কোনো টাকা পাবে না বলে প্রমাণিত হয়।একই ভাবে আবুল বাসার বলেন আমার ঋণ শোধ হয়ে গেছে,, জমার পাশ বই হাতিয়ে নিয়ে আমার কাছে ৮০হাজার টাকা পাবে বলে মামলা দিয়েছে।
এদের অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন।কেউই শীর দাঁড়া সোজা করে দাঁড়াবার শক্তি কিবা চলার অবলম্বন নেই। বেশীর ভাগই নদী ভাঙা ও সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ। এদের নিয়েই অনির্বাণ মাল্টিপারপাস নামে চড়া সুদের দোকান খুলে বসেছেন মুরাদ হোসেন।
একই ভাবে প্রত্যেক গ্রাহকই বলেন -আমাদের কাছে টাকা পাবে না,, কারো কাছে হয়তো দু’তিন পাঁচ হাজার টাকা করে পাবে কিন্তু মুরাদ এটাকার অংক আট দশগুণ বাড়িয়ে হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলা দিয়েছে।
আমরা সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করি। মুরাদ হোসেনের হয়রানি ও মিথ্যা মামলা থেকে বাঁচতে চাই।