সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমদ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে সিআইডি। গত বোরবার দুপুরের সুনামগঞ্জ আদালতে আসামীকে প্রেরন করে তিনদিনের রিমান্ডে জন্য আবেদন করেছেন সিআইডি আদালতে।
গত শনিবার বিকালে সুনামগঞ্জের সিআইডি অফিসার আব্দুর রউফের নেতৃত্বে গত শনিবার বিকালে ছাতক উপজেলার ধারনবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ হত্যাকান্ডে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আনার উদ্দিন নামে একজনকে আটক করেছে সিআইডি।সে উপজেলার উত্তর খুরমা ইউপির মৈশাপুর গ্রামের মৃত মখলিছুর রহমানের পুত্র আনার উদ্দিন জানা যায়, দীঘ ৪ বছর ৫ মাসে পর গত ২০১৮ সালে ২২ জুন দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তরা মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে
নৃংশসভাবে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করেছে। সে উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের পুরান মৈশাপুর গ্রামের মৃত মাষ্টার আব্দুস সাত্তারের পুত্র ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া গত ২০১৮ সালে ২২ জুন রাতে তার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন। ২০১৮ সালে ২৪ জুন সকালে গ্রাম সংলগ্ন পাতলাচুড়া বিলের কচুরি পনায় পড়ে থাকা তার ব্যবহৃত জুতা ও লুঙ্গি এবং এ বিল থেকেই তার ভাসমান লাশ উদ্ধার করেন পুলিশ। ফারুক মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার স্ত্রী রেহেনা বেগম বাদী হয়ে ২০১৮ সালে ২৫ জুন রাতে উত্তর খুরমা ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ছাতক থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও থানা পুলিশ এ এজাহার গ্রহন না করে এস আই অরুপ সাগর নানা টালবাহানা শুরু করেছিল। পরে নিহতের নিরুপা হয়ে ২০১৮ সালে ২৭ জুন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সাইফুল ইসলাম মজুমদারের আদালতে এ মামলা দায়ের করেন নিহতের স্ত্রী রেহেনা বেগম।আদালত তার দায়ের করা মামলাটি পুলিশের দায়ের করা মামলার সাথে সংযুক্ত করে পদক্ষেপ নিতে থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। এজাহারে এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের চাচাতো ভাই বিল্লাল আহমদকে আসামী করায় থানা পুলিশ মামলা গ্রহন করেনি। অবশেষে নিহত ফারুকের স্ত্রী বাদি হয়ে আদালতে এ মামলা দায়ের করেন । আদালত থানায় মামলাটি এফআইরভুক্ত করার নির্দেশ দিয়ে হত্যা মামলা গ্রহন না করায় ছাতক থানার ওসিকে ৪ কার্য দিবসের মধ্যে কারন দর্শানোর আদেশ দেন আদালত।পরে অবশেষে হত্যা মামলা থানায় রুজু করেন পুলিশ।
নিহত ফারুকের স্ত্রী রেহেনা বেগম জানান, ‘সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ও পৃষ্টপোষকতায় স্থানীয় পর্যায়ে অন্যায় ও নানা অপকর্মের রাজত্ব কায়েম করেছেন তারই চাচাতো ভাই উত্তর খুরমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিলাল আহমদ। বিলালের সাথে নানা কারণে র্দীঘদিন ধরে তার স্বামীর দ্বন্দ্ব রয়েছে। বিলালের নানা অন্যায় ও অবৈধ কাজের প্রতিবাদ করায় সে তার স্বামীর উপর ক্ষিপ্ত ছিল। তার স্বামী আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল পদে থাকলেও বিলালের অন্যায় কাজে কোনোদিন প্রশ্রয় দেননি।’ আ’লীগ নেতা ফারুক মিয়া হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা না নেয়ায় ও খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, শোকর্যলি, ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ছাতক উপজেলা আ’লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সমাবেশের পূর্বে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে কালো ব্যজ পড়ে খন্ড-খন্ড মিছিল সহকারে লোকজন জড়ো হতে থাকে। এসময় ছাতক শহর মিছিলে মিছিলে উত্তাল হয়ে উঠে। মিছিলকারিরা ফারুকের হত্যাকারিদের গ্রেফতারের দারি করেছিল। এ হত্যাকান্ডে পুলিশ নানা তালবাহানা করে প্রধান আসামী বিল্লাল আহমদসহ ৬জন আসামীকে নাম বাদ দিয়ে সিলেট পিবিআই পুলিশ পরিদর্শক শহীদুল ইসলাম সুনামগঞ্জ আদালতে মামলার চাজশীট দাখিল করেন। পিবিআই পুলিশের দাখিলকৃত প্রতিবেদনের উপর বাদীনি আদালতে নারাজি দাখিল করেন। এ পর বহুল আলোচিত মামলাটি সিআইডি হাতে হস্তান্তর করেন আদালত। বহুল আলোচিত ফারুক হত্যার মামলাটি পুর্নতদন্তে দায়িত্ব পেয়েছেন সিআইডি। দীঘদিন সিআইডি গোপনে তদন্ত করে বহুল আলোচিত ফারুক হত্যার মামলার পুর্নতদন্ত শুরু করেন। এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আসামী আনার উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছেন সিআইডি।
এ আলোচিত মামলার তদন্তকারি সিআইডি অফিসার আব্দুর রউফ আসামী গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাবহত রয়েছে। নিহতের ভাই আকিক মিয়া জানান, ঘটনার পরদিন থেকেই থানায় এজাহার নিয়ে একাধিকবার যাওয়া হয়। মামলার আসামীদেরকে রক্ষা করতে থানার ওসি সে সময় থেকেই বিভিন্ন অজুহাত সৃষ্টি করেছিল। নিহতের পরিবারের অজান্তেই থানায় একটি মামলা রুজু করা করে একটি সাজানো নাটক করেন ওসি আতিকুর রহমান ও এস আই অরুপ সাগর। মামলার বাদী নিহত ফারুক মিয়ার স্ত্রী রেহেনা বেগমের অভিযোগ, মামলার এজাহার পরিবর্তন করতে বলেন থানার ওসি। এছাড়া ইউপি চেয়ারম্যানের নাম বাদ দিয়ে অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ দেন। আসামীর নাম বাদ না দেয়ার ৫ দিনেও আলোচিত এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় থানায় কোন মামলা হয়নি। অবশেষে বাধ্য হয়ে নিহত ফারুকের স্ত্রী আদালতে মামলা দায়ের করেন।
অপরদিকে আ’লীগ নেতা ফারুক মিয়া হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা না নেয়ায় ও খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, শোকর্যলি, ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ছাতক উউপজেলা আ’লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সমাবেশের পূর্বে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে কালো ব্যজ পড়ে খন্ড-খন্ড মিছিল সহকারে লোকজন জড়ো হতে থাকে। এসময় ছাতক শহর মিছিলে মিছিলে উত্তাল হয়ে উঠে। মিছিলকারিরা ফারুকের হত্যাকারিদের গ্রেফতারের দাবি করেন ছাতকবাসী সচেতন মহল।